রাব্বি মিয়া:
মৌলভীবাজারের রাজনগরে মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাহেল হোসেনকে আটক করতে গিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সদস্যরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, চেয়ারম্যানের অনুসারীরা ডিবি পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং ধস্তাধস্তিতে ২-৩ জন ডিবি সদস্য আহতও হন। তবে, ডিবি পুলিশের ওসি হামলার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। এদিকে, ঘটনার সময় ডিবি পুলিশ ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ক্যামেরার ডেটা রেকর্ডার জব্দ করে নিয়ে যায়। রাজনগর থানা পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হামলায় অংশ নিয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও লেখা প্রচার হয়। সেই ঘটনার সূত্র ধরে, মৌলভীবাজার ডিবি পুলিশ চেয়ারম্যান রাহেল হোসেনকে আটক করার জন্য কয়েকবার অভিযান চালায়। কিন্তু প্রতিবারই তিনি পালিয়ে যান। বৃহস্পতিবার রাতে চেয়ারম্যান রাহেল হোসেন ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করতে অভিযান চালায়। পুলিশ গাড়ি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গেটের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে চেয়ারম্যানের অনুসারীরা গেট বন্ধ করে দেয়। ফলে পুলিশ ও চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, ধস্তাধস্তির সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ডিবির গাড়ি আটকে রাখার খবর পেয়ে রাজনগর থানার ওসি ঘটনাস্থলে যান। তবে, তিনি পৌঁছানোর আগেই গেট খুলে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ডিবি পুলিশ চেয়ারম্যানকে আটক করার জন্য পরিষদে গেলে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক ও অন্যান্য অনুসারীরা পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে চেয়ারম্যানকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পরিষদের গেট বন্ধ করে ডিবি পুলিশকে আটকে রাখারও চেষ্টা করা হয়। পরে অবশ্য গেট খুলে দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান রাহেল হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মৌলভীবাজার ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর আবু জাফর জানান, একটি নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তারা ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন। তবে, চেয়ারম্যানকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের ওপর হামলা ও আহত হওয়ার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। সিসিটিভির ডিভিআর জব্দ করার বিষয়ে তিনি বলেন, একটি বিশেষ কাজের জন্য সেটি আনা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সেটি ফেরত দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে রাজনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুর্শেদুল হাসান খান বলেন, ওরা অভিযানে আসছিল। ডিবি পুলিশের ফোন পেয়ে আমি ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। যাওয়ার আগেই গেট খুলে দেয়া হয়। আহতের বিষয়টি আমার জানা নেই।