নিজস্ব প্রতিবেদক::
মৌলভীবাজার শহরের শমসেরনগর রোডের ব্যবসায়ী শাহ ফয়জুর রহমান রুবেলকে হত্যার আসামী ছিনতাইকারী জুয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়।
পুলিশ জানায়, রবিবার (১৭ আগস্ট) জুয়েল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে শ্রীমঙ্গল উপজেলার লইয়ারকুল এলাকার দিনমজুর সুহেল মিয়ার ছেলে।
এসময় হত্যাকান্ডের সময় আসামি কর্তৃক ব্যবহৃত মাস্ক, জুতা, ধারালো ছুরি, রক্তমাখা ২০ টাকার নোট, ২টি এলবো, একটি সাসপেনশন গøু ও দোকানের ক্যাশ কাউন্টার থেকে একটি রক্তমাখা ফাইল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, জুয়েল মিয়া আগে একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতো। বর্তমানে বেকার এবং হতাশাগ্রস্ত। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থাও শোচনীয়। বাবা সুহেল মিয়া দিনমজুর হিসেবে কাজ করে। মূলত আর্থিক কষ্ট মেটানোর জন্য ছিনতাইয়ের মত অপরাধের পথ বেছে নেয়। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল মিয়া স্বীকার করে যে, সে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ৬ আগস্ট মৌলভীবাজার শহরে আসে, পুরো শহর ঘুরে কিন্তু সুবিধাজনক পরিস্থিতি না পেয়ে ফিরে যায়। পরদিন ৭ আগস্ট বিকেলে আবার শহরে ফিরে আসে এবং কুসুমবাগ এলাকায় নেমে সাইফুর রহমান রোড হয়ে শমসেরনগর রোডের দিকে হেঁটে যায়। সে মূলত একটু নিরিবিলি এলাকায় লোকজন কম এমন দোকান খুঁজছিল।
পথিমধ্যে দোকানগুলো লক্ষ্য করতে থাকে এবং “দি নিউ আরপি হার্ডওয়্যার” নামের দোকান থেকে ২টি এলবো ও একটি সাসপেনশন গøু কিনে সুযোগের জন্য কিছুক্ষণ অবস্থান করে । সেখানে লোকজন বেশী থাকায় সুয়োগ না পেয়ে সে চলে যায়।
পরে পাশের “এফ রহমান ট্রেডিং” দোকানে দোকান মালিক রুবেলকে একা দেখে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। সেসময় রুবেল মিয়া নামাজে থাকায় জুয়েল কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে। নামাজ শেষ হলে সে ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ করে এবং রঙ কেনার কথা বলে দোকানের ক্যাশ থেকে রুবেল মিয়াকে দোকানের ভিতরের অংশে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তাকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। রুবেল মিয়া তাকে বাঁধা প্রদানের চেষ্টা করলে সে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে এবং দোকানের ক্যাশ বাক্স থেকে ১১০০ টাকা নিয়ে দ্রæত পালিয়ে যায়।
এর আগে ০৭ আগস্ট সন্ধ্যায় শহরের শমসেরনগর রোডের এফ রহমান ট্রেডিং দোকানের মালিক শাহ ফয়জুর রহমান রুবেলকে (৫৫) ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নম্বর-১৮) দায়ের করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল খয়ের, সদর মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান।